Header Ads

কোথাও কেউ নেই

কোথাও কেউ নেই (১৯৯২); হুমায়ূন আহমেদ : ৮.৪

জনপ্রিয়তার দিক থেকে যে কয়টা বই হুয়ায়ূন আহমেদের সেরা তার মধ্যে “কোথাও কেউ নেই” অত্যন্ত সামনের দিকের বই। লেখা বা মানের দিক থেকে যদিও তিনি এর থেকেও অনেক ভালো কিছুর স্রষ্টা তারপরেও এখানে তিনি যে বাকের ভাই চরিত্রটিকে যেভাবে সাজিয়েছেন তা সবার নজর কাড়ে। সমাজ আর জীবনের সাথে লড়ে যাওয়া একটি মেয়ের গল্প নিয়ে তৈরী একটা উপন্যাস। পরে এটিকে ধারাবাহিকে রূপান্তর করা হয়। গল্পের শেষে বাকের ভাইয়ের ফাঁসির দেয়ার প্রতিবাদে জনগন একত্রে হয়ে মিছিল করা বা ফাঁসির পরের দিন  নোয়াখালীতে বাকের ভাইয়ের কুলখানি করার মতো ঘটনা এর জনপ্রিয়তার জানান দেয়। এত জনপ্রিয় একটি নাটক পরবর্তীতে বিটিভিতে পুনঃপ্রচার করতে চাইলেও সম্ভব হয় এর ক্যাসেট হারানোর জন্য। এরপরে ক্যাসেট পাওয়া গেলে তা ডিজিটাল করা হয় এবং ৮ এপ্রিল, ২০২০ থেকে বিটিভিতে  পুনঃপ্রচারিত হয়। তুমুল জনপ্রিয় এই রচনা নিয়ে আমার লেখার মতো কিছু নেই, কেননা এর গল্প সবারই মোটামুটি জানা। তবুও বইটা যেহেতু পড়েছি তাই নিয়ম রক্ষার্থে কিছু লেখা।
গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র বাকের ভাই এক বেকার মানুষ। যদিও এলাকার সব তদারকির দায়িত্ব সে নিজেই নিজের উপরে নিয়েছেন, যদিও পরবর্তীতে এটিই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য। প্রথমে চরিত্রটাকে বখাটে মনে হলেও এর প্রতি হঠাৎই আপনি দুর্বল হয়ে যাবেন তার ভাল মানসিকতা বা মুনাকে একটু সাহায্য করতে চাওয়ার আগ্রহ দেখে। অন্যদিকে, মুনা নামের সাহসী মেয়েটা নিন্দুকদের কথা কানে না নিয়ে জীবন চালিয়ে যাচ্ছে, যেখানে তার আপন বলতে এক মামা আছে, আছে কিছু মামাত ভাই-বোন। যে বয়সে তার খেলার কথা তখন সে মা বাবা হারায়। পরবর্তীতে তার প্রেমিককে হারায়; যদিও এখানে হারানো বললে ভুল হবে, কারণ প্রেমিককে সে নিজেই ছেড়ে দেয়। কারণ হিসাবে বইয়ে এবং নাটকে কিছু পার্থক্য রয়েছে। প্রচন্ড রকমের ভাল মনের এই মেয়েটি ঠিকই আপনার মনে যায়গা করে নেবে।
অনেকে বইটির সমালোচনা করে বলে, এখানে লেখকের নারী বিরোধী মনোভাব আছে। আমি ব্যাপারটাকে এভাবে দেখি না। লেখক ঠিকই এই নারী চরিত্রটাকে সব যায়গায় জিতিয়েছেন, দেখিয়েছেন তাদের ক্ষমতা। গল্প শেষে সব হারানো নিষ্পাপ মেয়েটে সদ্য ভালোলাগতে থাকা বাকের ভাইকেও হারায়, সেই মুহূর্তটা আপনার হৃদয়ও ছুয়ে যাবে, মনে হবে আসলেই কোথাও কেউ নেই।
পুনশ্চঃ নাটকে এই দৃশ্যটাকে ‘হাওয়ামে উড়তা যায়ে’ গানের সাথে যেভাবে দৃশ্যায়িত করা হয়েছে তা দেখে কাঁদার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন অনেকেই।


মোঃ রাজিবুল ইসলাম
কনীনিকা কুঞ্জ, নারুলী।।

No comments

Powered by Blogger.