Header Ads

নন্দিত নরকে

নন্দিত নরকে (১৯৭২); হুমায়ূন আহমেদ : ৮.৯

 বাংলা সাহিত্যে যে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের আগমন হয়েছে তা জানান দিতেই হুমায়ূন আহমেদ লিখেছিলেন “নন্দিত নরকে”। যদিও এটি তার দ্বিতীয় উপন্যাস, কিন্তু পড়া মাত্রই আহমেদ ছফা এটিকে প্রকাশ করেন। প্রথম প্রচ্ছদটি লেখকের ছোট ভাই জাফর ইকবাল করলেও বর্তমানের চিরচেনা লাল প্রচ্ছদটি ধ্রূব এষ এর করা। ২০০৬ এ এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রও তৈরি হয়। একটি নিম্নবিত্ত পরিবারের গল্প ও মেয়েরদের অসহায়তার কথা এত সূক্ষ্মভাবে তুলে এনেছে যা না পড়লে বোধগম্য হয় না। লেখকের দৃষ্টি এড়াতে পারেনি ছোটখাট কোন বিবরণও, ঠিক যেমন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তার লেখায় সরাসরি চোখের সামনে তুলে আনতেন বাস্তব চিত্র। এত বিস্তরভাবে বর্ণ্না করা হুমায়ন আহমেদের কোন লেখা আমি পাই নি।
 গল্পটি লেখক বলে গেছেন খোকা নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রের হাত ধরে। আর গল্পের মধ্যমনি ছিল খোকার  মানসিক বিকারগ্রস্ত বোন রাবেয়া। ছিল খোকার মা, বাবা, ছোট বোন রুনু আর তার বাবার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ছেলে মন্টু। পরিবারটিতে খোকার বাবার ভার্সিটি জীবনের বন্ধু স্কুল শিক্ষক শফিকও থাকতেন যে কিনা বাড়ির ছোট ছেলেমেয়েদের পড়ান। এছাড়াও আছে পাশের ধনী পরিবারের মেয়ে শিলু আর হারুনের কথা, যে হারুন পছন্দ করত রাবেয়াকে।
একদুপুরে রাবেয়া হারিয়ে গেলে যখন তাকেই পাওয়ার আশা ক্ষীণ হয়ে আসে তখন স্কুল শিক্ষক শফিক তাকে নিয়ে আসেন। কিছুদিন পড় অসুস্থ হয়ে যায় রাবেয়া, এবং ডাক্তারের কাছে গিয়ে জানতে পারে রাবেয়া  সন্তান সম্ভবা। যখন রাবেয়ার কাছে থেকে পরিবার কিছুই জানতে পারে না তখন চেষ্টা করে তাকে বিয়ে দেবার, যা কিনা সফল হয় না। তাই গোপনে রাবেয়ার গর্ভপাত করানো হলে চূড়ান্ত অসুস্থ হয়ে পড়ে। পাশাপাশি মন্টু সব জানার পরে এক অঘটন ঘটিয়ে ফেলে। পরিবারটির আসহায়ত্বের শেষ পরিণতি জানতে শেষ পর্যন্ত কোন ক্লান্তি ছাড়াই ধরে থাকবেন বইটা। এই নিম্নবিত্ত পরিবারের গল্পটা শেষে এসে আপনার অন্তরে দাগ কেটে দিয়ে যাবে। যাদের কাছে হুমায়ূন আহমেদকে লেখাকে সস্তা বিনোদন ও বাজারী লেখা বলে মনে হয়, তাদের জন্য অবশ্য পাঠ্য বই এটা, যা আপনার সিদ্ধান্তকে বদলাতে বাধ্য করবে।


মোঃ রাজিবুল ইসলাম
কণীনিকা কুঞ্জ, নারুলী।।


No comments

Powered by Blogger.