হাজার বছর ধরে
হাজার
বছর ধরে ( ১৯৬৪ ); জহির রায়হান : ৮.১
সহজ
সাবলীলভাবে একটানা গল্প বলে যাওয়া লেখক তার “হাজার বছর ধরে” উপন্যাসে দেখিয়েছেন মানুষের জীবনধারা। সেই চাওয়া-পাওয়া, পূর্ণতা-অপূর্ণতা, ভালবাসা –ক্ষোভ, রাগ,সুখ- দুঃখ নিয়ে জীবন সেই সৃষ্টির শুরু থেকেই সমান্তরালে এগিয়ে চলেছে। তার গতি কখনও হয়ত কমে বা বাড়ে তবে
দিকের কোন পরিবর্তন হয় না। জীবনের
এই গতিময়তার সাথে সমাজের বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, কুসংস্কার, পুরুষ শাসিত সমাজে নারীদের অবস্থানকে একত্রিত করে এক স্মরণীয় উপন্যাসের
সৃষ্টি করেন। পরবর্তীতে লেখকের স্ত্রী বইটিকে চলচ্চিত্রে রুপ দেন।
গল্পের
শুরু হয় পরীর দীঘির
পাড়ের একটি গ্রামকে কেন্দ্র করে যার সৃষ্টি জানা না গেলেও ধারণা
করা হয় “কাশেম শিকদার”আর তার বউ
“ছমিরন বিবি” এই গ্রামের গোড়পত্তন
করেন। কিন্তু গল্পে সেই শিকদার বাড়ির
প্রধান হল মকবুল, যে
থাকে তার তিন বউ আমেনা, ফাতেমা
আর টুনিকে নিয়ে। তবে ১৪ বছরের টুনি
অন্য বউদের মতো না। সে দাপিয়ে বেড়াতে
চায় চারিদিকে, জোছনায় শাপলা তুলতে যাওয়া বা খেজুরের রস
চুরি করে খাওয়ার বয়সে সে সংসার নিয়ে
ব্যস্ত থাকতে পারে না। তাই এই বাসনাগুলো সে
পূরন করে সেই গ্রামেরই মা-বাবা হারানো
এক যুবক মন্তুকে দিয়ে। সেখানে থেকে এক দুর্বলতা তৈরী
হলেও তার শেষ পরিণতি জানতে আপনাকে ফিরে যেতে হবে উপন্যাসে। পাশাপাশি আবুল, ফকিরের মা, রশিদ চরিত্রগুলো তাদের গল্প দিয়ে এগিয়ে নিয়েছে উপন্যাসকে।
এক
আজানা মোহ নিয়ে আপনি হারিয়ে যাবেন গ্রামটি সব চরিত্রের মাঝে
যেখানে বসন্তের হাওয়ায় হারিয়ে যায় একের পর এক মানুষ,
কবিরাজকে দিয়েও থামানো যায় না মৃত্যুর মিছিল।
অথবা আপনাকে আচ্ছন্ন করে রাখবে রাতের সেই পুঁথির সুর। খুব একাকিত্ব বোধ হবে, এক অদ্ভুত শূণ্যতা
তৈরি হবে আপনার মাঝে যখন রাত বাড়বে, হাজার বছরের পুরোনো সেই রাত।
মোঃ রাজিবুল
ইসলাম
কনীনিকা কুঞ্জ,
নারুলী।।
No comments