Header Ads

১৯৭১


১৯৭১ (১৯৮৬); হুমায়ূন আহমেদ : ৭.৭
হুমায়ূন আহমেদ “১৯৭১” উপন্যাসটাতে আপনি পাকিস্তানিদের বর্বরতার অনেক ভাল নিদর্শন পাবেন। স্বভাবসুলভ ভাবেই যখন অপেক্ষা করবেন পালটা আক্রমনের ঠিক তখনই উপন্যাসটা শেষ হয়ে যায়। তাই একে না বলা যাচ্ছে ছোট গল্প, না বলা যাচ্ছে উপন্যাস।
জন্মগত কারণেই কল্পনার সুবিধার্থে অন্য কিছু উপন্যাসের মতো এখানেও বেছে নেয়া হয় ময়মনসিংহের একটি গ্রামকে, নাম নীলগঞ্জ। সেই গ্রামে মিলেটারী আসে এবং স্কুল ঘর দখল করে। সময়কাল নিয়ে এখানে একটু বিভ্রান্তি লক্ষ্য করা যায়। গ্রামটিতে মিলেটারী আসে গরমে ধান কাটার সময় অর্থ্যাৎ এপ্রিল-মে মাসে। কিন্তু সে সময় আমরা জানি মিলেটারি প্রধান শহরগুলোতেই ছিল, নীলগঞ্জের মতো বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে এত তাড়াতাড়ি যাওয়ার কথা না। তাও যেহেতু গিয়েছেই, তাই আমরা গল্পে ফিরি। যেহেতু তারা স্কুলে আশ্রয় নেয় আর তারা খোজ পায় পাশের বনে মুক্তিবাহিনী আশ্রয় নিয়েছে তাই  স্কুলের শিক্ষক আজিজ মাস্টার এবং মসজিদের ইমাম সাহেবকে ডেকে আনেন, চালায় তাদের ওপর নির্যাতন। শেষ পর্যন্ত তারা বলে কি না মুক্তিবাহীনির কথা বা আসলেই তারা জানে কি না তাদের কথা, তা জানতে পরতে পারেন বইটি। গল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হল মেজর এজাজ আহমেদ এবং তার সহযোগী রফিক। এখানে লেখক কিছু জায়গায় মেজর এজাজের পক্ষ নিয়েই কথা বলে মেজরকে মহৎ ও জ্ঞানী হিসেবে তুলে এনেছেন। আর রফিককে দিয়ে শেষ অংশে লেখক পাঠকদের মনে দাগ কাটতে চেয়েছেন এবং অনেকটাই স্বার্থক এখানে তিনি।  
লেখক হিসেবে বেশ বৈচিত্রময়তার মধ্য দিয়ে গেছেন হুমায়ূন আহমেদ। সেই মোঘল সম্রাট বাবার বা তার ছেলে হুমায়ুন থেকে শুরু করে বিশ্বযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ, প্রেম বা রসাত্মক কৌতুক জাতীয় কিছু লেখতেই ছাড় দেন নি। তবে নিজ চোখে দেখা মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে হুমায়ুন আহমেদ যা দিয়েছেন, তার চেয়ে একটু বেশি আশা করেছিল হয়ত পাঠকরা। যুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আগুনের পরশমনি বা ১৯৭১ লিখলেও মুক্তিযুদ্ধকে পাঠকদের সামনে প্রকৃত অর্থে আনতে পেরেছিলেন “জোছনা ও জননীর গল্প”তেই।


মোঃ রাজিবুল ইসলাম
কণীনিকা কুঞ্জ, নারুলী।।




No comments

Powered by Blogger.