Header Ads

চলচ্চিত্রের সাথে বোঝাপড়া

 চলচ্চিত্রের সাথে বোঝাপড়া (২০১৬); বেলায়াত হোসেন মামুন: .


একটা রিভিউ এর রিভিউ লেখা কিছুটা জটিল কাজ। বইটা কে সম্পূর্ণরূপে রিভিউ বই বলাটাও মুশকিল। কারণ রিভিউয়ের পাশাপাশি এইখানে বাংলা চলচ্চিত্রের শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত একটা রোডম্যাপ দেওয়া হয়েছে। পুরো বইটির  সব লেখাবিভিন্ন সময় বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপানো হয়েছিল। লেখক  সম্ভবত, শুধুমাত্র ভূমিকাটা বইয়ের জন্য লিখেছেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নিয়ে ডিটেইলস একটি বই। যদিও আমি এর পুরোটা আস্বাদন করতে পারিনি। বিস্তারিত নিয়ে বলার আগে সব্যসাচী হাজরা প্রচ্ছদের আলাদাভাবে প্রশংসা  করাটা জরুরী। এত সুন্দর একটা প্রচুর দেখার পর বইটা একবার হলো আপনি হাতে নেবেন, ভেতরের কন্টেন্টের কথা  পরে বিবেচ্য।

 

 বইটির লেখাগুলোকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রথমত, অবিভক্ত পূর্ব বাংলার সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বছরভিত্তিক ভালো সিনেমা গুলোর তালিকা; দ্বিতীয়ত, বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি কিছু  নির্মাতার কথা এবং তৃতীয়তচলচ্চিত্রের এবং চলচ্চিত্রের বই রিভিউ।  এই তিনটি অংশকে একটু বিস্তারিতভাবে বলা যাক-

বইয়ের শুরুতে বেলায়াত হোসেন মামুন নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে শুরু করেনবলেন নিজের চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত হওয়ার কথা  আর ম্যুভিয়ানা চলচ্চিত্র সংসদের কথা।  এরপর তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের রোড ম্যাপ অংকন করতে গিয়ে হীরালাল সেন এর সময় থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত বাংলা চলচ্চিত্রের একটি সম্যক ধারণা দেন। দেশভাগের চলচ্চিত্র বা এফডিসি  প্রতিষ্ঠাসহ  মোটামুটি সব তুলে এনেছেন।  এরপর ৬০ দশক থেকে আলোচিত সব সিনেমাগুলোর  প্রতি আলোকপাত করেছেন। পাশাপাশি চলচ্চিত্র সংসদের কথা উঠে এসেছে এই অংশটুকুতে। এরপর তিনি মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রের প্রতি  তার চিন্তাভাবনা ব্যক্ত করেছেন।  পরের অংশকিংবদন্তি নির্মাতাদের কথা বলতে গিয়ে তিনি বাদল রহমানের কথা বলেছেনতার সঙ্গে মেশার দরুন বাংলা চলচ্চিত্রে  তার ভূমিকা বেশ সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। সত্যজিৎ রায় রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে একত্রে লেখার পাশাপাশি সত্যজিতের দু-একটা মুভি নিয়ে মন্তব্য করেছেন।  এরপর ঋত্বিক কুমার  ঘটকের বেলায়তিনি পরিচালকের পরিবার থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র অঙ্গনে জড়িয়ে পড়ার সবটাই তুলে এনেছেন; কথা বলেছেন তার সবগুলো চলচ্চিত্র নিয়ে। বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম নক্ষত্র মৃণাল সেন তার আলোচনা থেকে বাদ পড়েননি। মৃণাল সেনের বেড়ে ওঠা থেকে তার চলচ্চিত্রের সকল পর্যায়ে নিয়ে তিনি আলোচনা করেছে। তারপর এসেছে জহির রায়হান আর তারেক মাসুদের কথা।  এখানেও তিনি তাদের চলচ্চিত্রে জড়িয়ে পড়া ও তাদের সব চলচ্চিত্র নিয়ে মন্তব্য করেছেনইঙ্গিত করেছেন তাদের হারানোর বেদনার প্রতি।  পরিশেষে তানভীর মোকাম্মেল আর মোরশেদুল ইসলামের  চলচ্চিত্র অঙ্গনে আসা ও বর্তমানে তাদের ভূমিকা এবং তাদের চলচ্চিত্র নিয়ে কথা বলেছেন।  এইসব নির্মাতাদের নিয়ে বলার পর তিনি তারেক মাসুদেররানওয়েচলচ্চিত্র ও তারেক মাসুদের চলচ্চিত্র চিন্তা নিয়ে অসাধারণ কিছু চিন্তার প্রকাশ ঘটান।  এরপর তিনি সব চলচ্চিত্র সংসদের ভূমিকা বর্তমানে চলচ্চিত্রের বেহাল দশা এবং ভবিষ্যতে এ থেকে উত্তরণের কিছু রূপরেখা দেন। শেষাংশে, তিনি মাহমুদুল  হোসেন ও তারেক মাসুদের বই নিয়ে কিছু কথা বলেন।

 

সম্পূর্ণ বইটিতে তিনি তাঁর বিভিন্ন সময়ে চিন্তাগুলো তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন।  বিভিন্ন নির্মাতাদের নিয়ে লেখাসমূহ বাদ দিলে বাকি যে বই বা মুভি রিভিউ থাকে সেগুলো না দেখে (বা পড়ে) এই বই পড়লে কিছুটা নিরস লাগতে পারে।  সর্বোপরি, বাংলা চলচ্চিত্রের  ইতিহাসকে  জানার জন্য খুব সুন্দর একটি বই এটি। 


মোঃ রাজিবুল ইসলাম

কণীনিকা কুঞ্জ, নারুলী।।



2 comments:

  1. কমেন্ট পড়তে আসছিলাম,কেউ কমেন্ট করেনাই দেখে কমেন্ট করে গেলাম🥴

    ReplyDelete
  2. কিন্তু কমেন্ট ডিলিট করে কিভাবে?

    ReplyDelete

Powered by Blogger.